এম, এস, এ রেজা ( শুভ্র শাওন) : নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিবন্ধন পেতে প্রায় অর্ধশত নতুন রাজনৈতিক দল আবেদন জমা দিয়েছে। এদের মধ্যে বেশ কিছু দল গতবারের মতো এবারও উদ্ভট নাম দিয়ে নিবন্ধন চেয়েছে। এর মধ্যে ‘বাংলাদেশ ইত্যাদি পার্টি’, ‘বৈরাবরী পার্টি’ এবং ‘মুসকিল লীগ’-এর মতো নামও আছে।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, আগামী রবিবার নতুন দল নিবন্ধন আবেদন জমা দেওয়ার শেষ তারিখ। এরপর আর সময় বাড়ানো হবে না। এর আগে তিন মাস সময় দিয়ে গত ২৬ মে আবেদনের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। সে অনুযায়ী ২৯ আগস্ট ছিল আবেদনের শেষ সময়। পরে আরও
দুই মাস বাড়িয়ে ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত আবেদনের সময় দেয় ইসি। কিন্তু এ দিন শনিবার ছুটির দিন হওয়ায় রবিবার পর্যন্ত আবেদন নেবে ইসি। নতুন দল বাছাই করে আগামী সংসদ নির্বাচনের আগে নিবন্ধন দেবে ইসি।
যেসব দল নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে তার মধ্যে রয়েছে- ১. নৈতিক সমাজ; ২. বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা লীগ; ৩. বাংলাদেশ ন্যাশনাল রিপাবলিকান পার্টি; ৪. মুসকিল লীগ; ৫. নতুন বাংলা; ৬. বঙ্গবন্ধু দুস্থ ও প্রতিবন্ধী উন্নয়ন পরিষদ; ৭. বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক মুক্তি আন্দোলন; ৮. বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক পার্টি; ৯. বাংলাদেশ ইত্যাদি পার্টি; ১০. প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক জোট; ১১. বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টি; ১২. বৈরাবরী পার্টি; ১৩. বাংলাদেশ বিদেশ প্রত্যাগত প্রবাসী ও ননপ্রবাসী কল্যাণ দল; ১৪. বাংলাদেশ জনমত পার্টি; ১৫. বাংলাদেশ জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি; ১৬. বাংলাদেশ জনতা পার্টি; ১৭. বাংলাদেশ ডেমোক্রেসি মুভমেন্ট; ১৮. বাংলাদেশ তৃণমূল জনতা পার্টি; ১৯. এবি পার্টি; ২০. সম্মিলিত সংগ্রাম পরিষদ; ২১. বাংলাদেশ জাতীয়বাদী আন্দোলন (বিএনএম); ২২. বাংলাদেশ এলডিপি; ২৩. বাংলাদেশ জাস্টিস পার্টি; ২৪. বাংলাদেশ ন্যাশনাল গ্রিন পার্টি; ২৫. বাংলাদেশ সর্বজনীন দল; ২৬. বাংলাদেশ ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক লীগ; ২৭. গণ রাজনৈতিক জোট গর্জো; ২৮. বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি (বিডিপি); ২৯. বাংলাদেশ বেকার সমাজ; ৩০. নতুন ধারা বাংলাদেশ; ৩১. ভাসানী অনুসারী পরিষদ; ৩২. বাংলাদেশ তৃণমূল লীগ ও বাংলাদেশ লিবারেল ডেমোক্রেসি পার্টিসহ প্রায় অর্ধশত দল।
এর আগে সর্বশেষ দল নিবন্ধনের জন্য ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে ইসি। নিবন্ধন পেতে আবেদন করে ৭৬টি রাজনৈতিক দল। কেএম নূরুল হুদা কমিশন কাউকেই নিবন্ধন দেয়নি। তবে তাদের মধ্যে আদালতের আদেশে নিবন্ধন পায় জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএম এবং বাংলাদেশ কংগ্রেস।
এর আগে ২০১৩ সালে গণবিজ্ঞপ্তি জারির পর ৪৩টি দল আবেদন করে। কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ কমিশন সে সময় বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ) ও সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটকে নিবন্ধন দেয়। সেনা সমর্থিত তত্ত্ব¡াবধায়ক সরকারের সময় ড. এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন ২০০৮ সালে দেশে প্রথমবারের মতো দলগুলোকে নিবন্ধন দেয়। সে সময় ১১৭টি দল আবেদন করেছিল। যাচাই-বাছাইয়ে পর নিবন্ধন পায় ৩৯টি দল। সব মিলিয়ে গত ১৪ বছরে মোট ৪৪টি দলকে নিবন্ধন দিয়েছে ইসি। এর মধ্যে শর্ত পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় ও আদালতের নির্দেশে পাঁচটি দলের নিবন্ধন বাতিলও করা হয়। ফলে বর্তমানে ইসিতে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল রয়েছে ৩৯টি।
এ পর্যন্ত যে পাঁচ দলের নিবন্ধন বাতিল হয়েছে, সেগুলো হলো- বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন, ফ্রিডম পার্টি, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক পার্টি (পিডিপি) ও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা)।