নিজস্ব প্রতিনিধি :
এখনও বেচে আছে ভালবাসা। নোয়াখালীর সেনবাগের যুবক গোলাম সারোয়ার বাবু (২৬) কে বিয়ে করে সুদূর মিশর থেকে বাংলাদেশে এসেছেন ডালিয়া নামের (২৬) বছরের মিশরীয় এক তরুণী। স্বামীর দেশ, বাংলাদেশের নোয়াখালীতে এসে সংসার শুরু করেছেন স্বামী বাবুর সঙ্গে। এই বিদেশি বধূকে দেখতে আশেপাশের এলাকার উৎসাহিত মানুষের ভীড়ে মুখরিত হয় তাদের বাড়ি।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় এই দম্পত্তি নোয়াখালী জেলার সেনবাগ উপজেলার নবীপুর ইউনিয়নের ৯নম্বর ওয়ার্ডের গোবিন্দপুর গ্রামে তাদের বাড়িতে আসেন। ২০২০ সালে মিশরে তারা বিয়ে করেন। বিয়ের পর এই প্রথম তারা বাংলাদেশে আসেন।
গোলাম সারোয়ার বাবুর সাথে সাক্ষাৎ করলে তিনি জানান, তিনি ২০১২ সালে জীবিকার জন্য মিশরে যান। সেখানে তিনি একটি গামেন্টেসে চাকরি করতেন। এবং ডালিয়াদের বাসার পাশেই একটি বাসায় থাকতেন তিনি। এবং সেই সুবাদে ডালিয়ার ভাইয়ের সঙ্গে তাহার বন্ধুত্ব হয়। এবং মাঝে মধ্য ডালিয়াদের বাসায় যাতায়াত ছিল তার। এই যাতায়াতের কারনে ডালিয়াকে তাহার ভাল লাগতে শুরু করে। এক সময় বাবু ডালিয়াকে তার ভালো লাগার বিষয়টি জানায়। এতে ডালিয়াও রাজি হয় ও তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০১৮ সালের দিকে ডালিয়ার পরিবারে বিয়ের প্রস্তাব দিলে তার পরিবারের কেউই রাজি হয়নি। পরে ডালিয়া অনেক কৌশলে তার মা-বাবাকে রাজি করালে ২০২০ সালে ওই দেশের আইন কানুন মেনে মিশরে থেকেই তাকে পারিবারিক ভাবে বিয়ে করে। গত বছর তাদপর একটি সন্তান ও হয়।দুঃখ জনক ভাবে সন্তানটি মারা যায়। এরপর এ প্রথম দুজনের এক সাথে দেশে আসা। বর্তমানে সুখে-শান্তিতে দিন কাটাচ্ছে তারা। বিদেশী পুত্রবধূকে কাছে পেয়ে শ্বশুর-শাশুড়িসহ পরিবারের সদস্যরা আনন্দিত বলেও জানান তিনি।
মিশরী তরুণী ডালিয়া, বাংলা বলতে না পারলেও মিশরী ভাষায় সংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। মিশরী ভাষা বাংলা অনুবাদ হিসেবে তার স্বামী বাবু সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশী খাবার এবং পরিবেশ তার ভালো লেগেছে। এটা তার স্বামীর দেশ। এ দেশকে তিনি অনেক ভালবেসেন। তবে মাংসের চেয়ে আলু তার বেশি পছন্দ বলেও মন্তব্য করেন এ বিদেশী তরুণী। তবে কারো সাথে মনের কথা প্রকাশ করতে না পারায় তার কষ্ট হয়। শ্বশুর বাড়িতে দুই মাস থেকে আবার মিশর ফিরে যাবেন বলেও জানান তিনি।
বাবুর বাবা গোলাম মাওলা মিয়া বলেন, পুত্রবধূ বাংলা ভাষা বলতে না পারলেও ইশারায় ইঙ্গিতে কথা বলছে। বিদেশিনী পুত্রবধূ কে কাছে পেয়ে পরিবারের সবাই আনন্দিত।
নবীপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন সোহেল বলেন, বিদেশী পুত্রবধূকে দেখার জন্য শত শত মানুষ তাদেরর বাড়িতে ভিড় করছে। গ্রামের সকল মানুষ তাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করে। এবং তাদের জন্য দোয়া করে।