বিশেষ প্রতিনিধি:
বুধবার আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে হারার পর হঠাৎই বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠক ডেকেছিলেন। তখনই আশঙ্কা দানা বেঁধেছিল। আর শেষমেশ সেটাই সত্যি হল। চট্টগ্রামের হোটেলে সাংবাদিক বৈঠকে এসে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর ঘোষণা করলেন তামিম ইকবাল। বিশ্বকাপের মাত্র তিনমাস আগে অধিনায়ক সরে যাওয়ার স্বাভাবিকভাবেই বড় ধাক্কা খেল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।
টি-২০ ক্রিকেট আগেই ছেড়েছিলেন। এবার টেস্ট ও ওয়ানডে থেকেও অবসর নিয়ে ১৬ বছরের কেরিয়ারে দাঁড়ি টেনে দিলেন বাংলাদেশের প্রিয় ক্যাপ্টেন তামিম। সাংবাদিক সম্মেলনে অবসর নেওয়ার কথা জানানোর সময় অত্যন্ত আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন বাংলাদেশের তারকা ক্রিকেটার। চোখের জল আটকাতে পারেননি তিনি। তামিমের অবসরের খবর দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে বাংলাদেশের ক্রিকেট মহল। হতবাক সবাই।
এদিন তামিম সাংবাদিকদের সামনে বলেন, “আমার আন্তর্জাতিক কেরিয়ারের যাত্রা এখানেই শেষ। আমি আমার সেরাটা দিয়ে ফেলেছি। আমি সর্বদা নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। ঠিক এই মুহূর্ত থেকে আমি আমার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানাচ্ছি। আমি সমস্ত সতীর্থ, কোচ, বিসিবি কর্তা, পরিবার-পরিজনদের ধন্যবাদ জানাতে চাই, যাঁরা আমার এতবছরের যাত্রাপথে পাশে ছিলেন।”
উল্লেখ্য, ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের হয়ে এখনও অবধি সবথেকে বেশি রানের মালিক তামিম। টেস্টেও বাংলাদেশের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান করেছেন তিনি। আর আন্তর্জাতিক টি-২০ ক্রিকেটে বাংলাদেশের হয়ে তৃতীয় সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডও তাঁর পকেটে। এই তিনটি রেকর্ড নিয়েই আজ অবসর নিলেন তামিম। জাতীয় দলের হয়ে ৭০টি টেস্ট, ২৪১টি ওয়ানডে ও ৭৮টি আন্তর্জাতিক টি-২০ ম্যাচ খেলেছেন তামিম। টেস্টে ৫১৩৪ রান সংগ্রহ করেছেন তিনি। সেঞ্চুরি করেছেন ১০টি। হাফ সেঞ্চুরি করেছেন ৩১টি।
অন্যদিকে ওয়ানডে ক্রিকেটে তাঁর রান ৮৩১৩। শতরান করেছেন ১৪টি। হাফ সেঞ্চুরি ৫৬টি। এছাড়াও, আন্তর্জাতিক টি-২০ ক্রিকেটে তিনি বাংলাদেশের হয়ে ১৭৫৮ রান করেছেন। দেশের হয়ে তাতে রয়েছে একটি সেঞ্চুরি ও সাতটি হাফ সেঞ্চুরি। ২০০৭ সাল থেকে টানা জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন তামিম। ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে তাঁর অভিষেক। সেবছরই দেশের হয়ে প্রথম আন্তর্জাতিক টি-২০ ম্যাচ খেলেন। পরের বছর, ২০০৮ সালে টেস্ট কেরিয়ার শুরু হয় তাঁর। অবশেষে, দীর্ঘ পথ পার করে যাত্রা শেষ করলেন তামিম।