নুর আলম, শরিয়তপুর
শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় এবছর সরিষার বাম্পার ফলনের আসা করা হচ্ছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এবছর জাজিরা উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ৩’শ ৮৫ হেক্টর বেশি জমিতে সরিষার আবাদ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সরিষার বাম্পার ফলন হবে বলে আসা করছেন কৃষকেরা।
জাজিরায় চলতি বছরে সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিলো ২৫’শ ৩০হেক্টর জমি। তবে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে এবছর প্রায় ২৯’শ ১৫ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে বলে জানায় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা।
এবছর জাজিরায় উচ্চ ফলনশীল বারি-১৪, বারি -১৭, বারি -১৮, বিনা-৪, বিনা-৯ সহ স্থানীয় মাসি ও টারি -৭ জাতের সরিষা আবাদ করা হয়েছে। এসব উচ্চ ফলনশীল সরিষায় হেক্টর প্রতি ফলন আসে প্রায় ১.৬ মেট্রিকটন। বিঘা হিসেবে প্রতি বিঘা জমিতে প্রায় ৫-৬ মন।
বর্তমানে সরিষার মন বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৬’হাজার ৫’শ টাকা থেকে শুরু করে ৭’হাজার টাকা পর্যন্ত। প্রতি বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করতে কৃষকের খরচ হয় ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা। তাই এবছর খরচ পুষিয়ে সরিষা থেকে ভালো লাভের আসা করছেন কৃষকেরা।
জাজিরার বড় গোপালপুরের কৃষক মোঃ রফিক মাদবর বলেন, তিনি ২ বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন। এর আগে তিনি ওই জমিতে আগাম শীতকালীন সবজি কালো বেগুন চাষ করেছিলেন। বেগুনে পর্যাপ্ত সার দেয়া হয়েছিলো তাই সরিষায় আর কোনো সার লাগবে না। শুধু একবার সেচ দিলেই হবে।
সেনের চর এলাকার কৃষক জামাল মাদবর জানান, সরিষা চাষে তেমন কোনো শ্রম দিতে হয়না। এক-দুবার সেচ এবং সামান্য সার দিলেই হয়। তাই উৎপাদন খরচও কম। এবছর বাজারে সরিষার ভালো দাম রয়েছে। এমন দাম পেলে খরচ পুষিয়ে ভালো লাভ হবে বলে জানান তিনি।
জাজিরার একাধিক কৃষকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সরিষা চাষে খরচ কম এবং অধিক লাভজনক। বর্তমানে বাজারে উচ্চ ফলনশীল জাতের সরিষার বীজ পাওয়া যায়। অল্প জমিতে অধিক ফলনে লাভ বেশি হওয়ায় জাজিরার কৃষকেরা সরিষা চাষের দিকে ঝুঁকছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ জামাল হোসেন জানান, দেশে ভোজ্য তেলের উৎপাদন বৃদ্ধিতে সরকারের মহা-পরিকল্পনার একটি অংশ হচ্ছে ব্লক ভিত্তিক সরিষা সহ অন্যান্য তেল জাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি। আমরা দীর্ঘদিন ধরে তেল জাতীয় ফসল উৎপাদন বৃদ্ধিতে কাজ করে যাচ্ছি। এরমধ্যে প্রণোদনা কর্মসূচি, তেল জাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্প, রাজস্ব কর্মসূচি ও এনএটিপি-২ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রদর্শনী স্থাপন করে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা অন্যতম। আমাদের এই প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। আমরা ২০২৫ সালের মধ্যে জাজিরাতে ৩৬’শ৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রায় কাজ করে চলছি।