আলমগীর মন্ডল
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
প্রথম আলো ট্রাস্ট পরিচালিত রাজশাহী ও নওগাঁর আলোর পাঠশালার শতভাগ শিক্ষার্থী এবার এসএসসি পরীক্ষায় পাস করেছে। তাদের মধ্যে একজন জিপিএ-৫ পেয়েছে।
নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার গুড়িহারী-কামদেবপুর আলোর পাঠশালার প্রধান শিক্ষক নূর আলম জানান, এবার তাঁদের প্রতিষ্ঠান থেকে ১০ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়ে সবাই পাস করেছে। একজন জিপিএ-৫ পেয়েছে।
জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর নাম সুমিতা রানী। প্রধান শিক্ষক বলেন, সুমিতা তার পরীক্ষার ফল জানার পর কেঁদে ফেলে। সে প্রতিদিন ৩ কিলোমিটার রাস্তা সাইকেল চালিয়ে বিদ্যালয়ে আসত। বর্ষার সময় কাদামাখা রাস্তা মাড়িয়ে হেঁটে আসত। গত দুই বছরে বিদ্যালয়ে তার শতভাগ উপস্থিতি ছিল।
প্রধান শিক্ষক আরও জানান, ২০১৯ সালে গুড়িহারী-কামদেবপুর আলোর পাঠশালা থেকে জেএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে জিপিএ ৪ দশমিক ৫৮ পায় সুমিতা। তার পরিবারের সদস্য চারজন। সুমিতার বাবা বিহারু দাস ভ্যানচালক। নিজের কোনো জমি নেই, এমনকি বাড়িভিটাও নেই। সরকারের দেওয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি ঘরে বাস করে তাদের পরিবার। সুমিতার বাবা সংসারের ভরণপোষণের জন্য ভ্যান চালানোর পাশাপাশি অন্যের জমিতে দিনমজুরের কাজ করেন। তাতেও সংসারের অভাব মেটে না। কিছুদিন আগে উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন ভ্যানটিও স্থানীয় একটি বাজার থেকে চুরি হয়ে যায়। সংসারের অভাব মেটানোর জন্য সুমিতার বাবার সঙ্গে তার বড় ভাই এবং মাকেও অন্যের জমিতে দিনমজুরের কাজ করতে হয়। পড়ালেখার ফাঁকে সুমিতা মা-বাবাকে মাঠের কাজে সহযোগিতা করে। এরই মধ্যে নিজের পড়ালেখা ঠিকভাবে চালিয়ে নিয়েছে সুমিতা
সুমিতার বাবা বিহারু দাস বলেন, ‘সংসারের অভাবে প্রথমে মনে করছিনু মেয়েকে বেশি দূর পর্যন্ত পড়ামু না। বিহা দিয়ে দিমু। কিন্তু সুমিতা এইট পাস করার পর মাস্টারগুলার কথামতো সুমিতার বিহা না দিয়ে পড়ালেখা করাতে লাগনু। তা ছাড়া সুমিতার মা বুলল, স্কুলে পড়াতে তো কোনো টাকাও দিতে হয় না। স্কুলত থাকেই তো সব দেয়। তাহলে পড়াতে সমস্যা কিসের।