স্টাফ রিপোর্টার:উমর ফারুক
নাটোরের গুরুদাসপুরে ধর্ষণের শিকার হয়ে চতুর্থ শ্রেণি পড়ুয়া ১১ বছরের শিশু এখন নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা। এ ঘটনায় অভিযুক্ত আসামি জাহিদুল খাঁ (৬০) দুঃসম্পর্কের দাদা হন বলে জানা যায়। তিনি উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের দক্ষিণ নাড়িবাড়ি গ্রামের কালু খাঁর ছেলে।
এ ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত আসামি জাহিদুল খাঁ পলাতক রয়েছে। তবে পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতারে অভিযানে রয়েছে বলে জানিয়েছেন গুরুদাসপুর থানার কর্মকর্তা ওসি মো. মোনোয়ারুজ্জামান।
পুলিশ জানায়, পারিবারিক কলহের কারণে শিশুটির বাবা-মার সংসার ভেঙ্গে যায়। পরবর্তীতে বাবা ও মা অন্যত্রে বিয়ে করে। এরপর থেকে শিশুটি তার চাচা-চাচির কাছে থাকত। এলাকার এক দুঃসম্পর্কের দাদা অভিযুক্ত আসামি জাহিদুল খাঁ মাঝে মধ্য শিশুটিকে নিয়ে তার ভ্যানে বেড়াতে যেত। পরে ৭ মাস পর শিশুটির শারীরিক পরিবর্তন দেখে পরিবারের মানুষ জিজ্ঞেস করলে কোনো উত্তর দেয়নি শিশুটি। তবে প্রসাব পরীক্ষার পর প্রাথমিকভাবে গর্ভে সন্তান থাকার কথা জানতে পারে পরিবার। পরবর্তীতে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে নিয়ে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করার মাধ্যমে চিকিৎসক অন্তঃসত্ত্বার বিষয়টি জানান। পরে শিশুটি এ ঘটনা তার পরিবারকে বলে। পরে গত ১৮ জুন শিশুটির দাদি বাদী হয়ে থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেন।
শিশুটির চাচি জানান, এখন প্রসবের সময় এগিয়ে আসায় শিশুটি ভীত হয়ে পড়েছে। সে সব সময় চুপচাপ থাকে। বেশি কথাও বলে না। প্রতিবেশীদের নানা কটুকথা শুনতে হয়। কিন্তু পুলিশ অভিযুক্ত ধর্ষককে গ্রেফতার করতে পারেনি। আমরা ধর্ষকের গ্রেফতার করে বিচার দাবী করছি।
গুরুদাসপুর থানার কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোনোয়ারুজ্জামান বলেন, ঘটনার পর ভুক্তভোগী পরিবার থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর পুলিশ অভিযুক্ত আসামিকে গ্রেফতারে অভিযানে নামে। কিন্তু আসামি কোনো ফোন ব্যবহার না করায় আমাদের তথ্য পেতে দেরি হচ্ছে। তাকে গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। শিশুটির বাচ্চা প্রসবের পর ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে সন্তানের বাবা সনাক্তকরণ করা হবে বলে এ কর্মকর্তা জানান।
গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শ্রাবণী রায় বলেন, শিশুটিসহ ভুক্তভোগী পরিবার আমার কাছে আসেন। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অন্তঃসত্ত্বা শিশুটির দায়িত্ব নেওয়া হয়েছে। অপ্রাপ্ত বয়সে মা হতে গিয়ে নানা আশঙ্কার হতে পারে। সে কথা চিন্তা করে সরকারিভাবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে শিশুটির প্রসব করানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিশুকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে বলে তিনি জানান।