মোঃ রাজিব
পটুয়াখালী প্রতিনিধি:
শখের বসে ৮০ টাকা দরে কিনেছিলেন ১১টি মুরগির বাচ্চা। শান্ত স্বভাবের হালকা বাদামি রঙের তিনদিনের অতিথি নিয়ে বাড়িতে ফেরেন তিনি। অন্যসব মুরগির মতোই স্বাভাবিক দেখভাল ও পরিচর্যা করছিলেন স্ত্রীর সহযোগিতায়। কিন্তু কে জানতো কয়েক মাস না যেতেই তিনদিনের বাচ্চা হয়ে উঠবে মস্তবড় ১৩ কেজি ওজনের মুরগি। আর এখন এক একটি মুরগি বিক্রি হচ্ছে কয়েক হাজার টাকায়। যা শুনতে গল্পকাহিনী মনে হলেও ঘটেছে এমন বিরল ঘটনা।
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার টিয়াখালী ইউপির ফোরলেন সংলগ্ন মধ্য রজপাড়া গ্রামের মৃত মোতাহার হাওলাদারের ছেলে প্রান্তিক কৃষক আবুল কালাম হাওলাদার। তার গৃহে দেশি প্রজাতির কবুতর, হাঁস, মুরগি পালনের পাশাপাশি ব্রয়লার উৎপাদনেও বেশ পরিচিত এই কৃষক। এমনকি ক্ষেতকৃষির সঙ্গে এই ছোট খামারেই নির্ভরশীল তিনি। তবে মাস ছয়েক আগে পটুয়াখালীর একটি ফিড খাবার বিক্রির দোকানে গিয়ে ফুটফুটে বাদামি মুরগির বাচ্চা দেখতে পান তিনি। সেখান থেকে শখের বসে ১১টি তিনদিনের বাচ্চা কিনে তার ছোট খামারে সংযুক্ত করেন। কয়েক মাস পরেই বাচ্চাগুলোর বাড়তি গঠনে চক্ষু চড়কগাছ হয় তার। বুঝতে পারেন এই বাচ্চা কোনো স্বাভাবিক জাতের মুরগি নয়। ৬ মাস পর প্রতিটি বাচ্চার ওজন হয় ৮ থেকে ১৩ কেজির বেশি। এরই মধ্যে ডিম পাড়তে শুরু করে একটি মুরগি। তবে বেশিদিন স্থায়ী হয়নি ডিম দেওয়া মুরগির সময়কাল।
১৩ কেজি ওজনের মোরগটির অত্যাচারে মত্যু হয় ডিম দেওয়া রানির। এদিকে দিনে প্রায় ৫শ গ্রাম খাবার প্রয়োজন হয়ে পড়ে তার গৃহে বেড়ে ওঠা বাড়তি গঠনের অতিথিদের। পরে সিদ্ধান্ত নেন বিক্রির। এরই মধ্যে খামারে উচ্চমাংস বৃদ্ধির এই মোরগ এবং মুরগির ১২টি বিক্রি করেছেন তিনি।
মঙ্গলবার দুপুরে অর্থাভাবে ৮ কেজির একটি মোরগ হাটে নিয়ে এলে চোখ কপালে ওঠে উপস্থিত সবার। মুহূর্তের মধ্যে মোরগটি এক নজর দেখতে ভিড় জমান উৎসুক মানুষ। পরে ৪শ টাকা দরে ৩২শ টাকায় মোরগটি বিক্রি করেন কৃষক কালাম।
হাটে আসা স্কুল শিক্ষক মো. সোহেল বলেন, জীবনে এতো বড় মোরগ দেখিনি। যার ওজন ৮ কেজি। চোখে না দেখলে বিশ্বাস করার মতো নয়।
৮ কেজির একটি মোরগ হাটে নিয়ে এলে চোখ কপালে ওঠে উপস্থিত সবার।
৮ কেজির একটি মোরগ হাটে নিয়ে এলে চোখ কপালে ওঠে উপস্থিত সবার।
মাছ বিক্রেতা শানু মিয়া জানান, আমার টাকা থাকলে অবশ্যই মোরগটি কিনে নিতাম পরিবারকে দেখানোর জন্য।
কৃষক আবুল কালাম বলেন, শখের বসে বাচ্চাগুলো কিনেছিলাম, লালন পালনে কোনো সমস্যা নেই। দেশি মুরগির মতোই চাল, ধান, গম, ভাত এবং ফিড খাবার খায়। কিন্তু এখন টাকার অভাবে বিক্রি করছি। বাড়িতে আর একটি মাত্র ১০ কেজির মুরগি আছে। সেটিও বিক্রির পর বাণিজ্যিক চিন্তা নিয়ে নতুন করে শুরু করবো।
পটুয়াখালী জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সঞ্জীব কুমার বিশ্বাস বলেন, এটি আসলে টাইগারভ্যান প্রজাতির একটি জাত। সচারাচর এদের চাষ খুব কম হয়। তবে মাঝেমধ্যে এর বাচ্চা পাওয়া যায়। এই মোরগ, মুরগির মাংস খেতে খুবই সুস্বাদু এবং ওজনে অনেক বেশি হয়।
প্রকাশক : শহিদুল ইসলাম
সম্পাদক : এম,এস,এ রেজা
প্রকাশক : 01746808322
সম্পাদক : 01712340047
ইমেইল : dailyajkersongram@gmail.com
Copyright © 2024 দৈনিক আজকের সংগ্রাম. All rights reserved.