শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:৫১ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
পুলিশের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস পুনরুদ্ধার করতে হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা পিরোজপুরে নার্সদের একদফা দাবীতে মানববন্ধন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবীতে পিরোজপুরে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সরকারি নির্দেশ মানছেন না কেরানীগঞ্জের বদলীকৃত উপজেলা প্রকৌশলী। সম্মানহানির জন্য আইনগত ব্যাবস্হা নিবেন নুর সালাম। ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা : সেনাবাহিনী কী কী করতে পারবে জলঢাকা প্রেসক্লাব এর পুনর্গঠন মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত কলাপাড়া উপজেলা ও পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। পিরোজপুরে গত ২৪ ঘন্টায় ৯৬ মিলিমিটার বৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত, নিন্মাঞ্চল প্লাবিত পিরোজপুরে জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত

কেরানীগঞ্জে অনুমোদনহীন ১৫ আবাসিক প্রকল্প ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে রাজউক।

  • আপডেট সময় : বৃহস্পতিবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০২৩
  • ১৩৪ বার পঠিত

আজকের সংগ্রাম ডেস্ক :

এক পাশে বুড়িগঙ্গা, আরেক দিকে ধলেশ্বরী। এই দুই নদীর মাঝের এলাকা কেরানীগঞ্জ। যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নসহ মূল ঢাকা শহরের কাছে হওয়ায় এলাকাটির জমির চাহিদা বাড়ছে। ফলে সেখানে নজর পড়েছে আবাসন ব্যবসায়ীদের। এরই মধ্যে নামে-বেনামে গড়ে তোলা হয়েছে ৭০-৮০টি আবাসিক প্রকল্প, যার একটিরও অনুমোদন নেই। অনুমোদনহীন এসব প্রকল্পের মধ্যে ১৫টির প্লট বিক্রি বন্ধে প্রকল্প মালিক ও স্থানীয় প্রশাসনকে চিঠি দিয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)।

ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ উপজেলাটি রাজউকের আওতাধীন। এই এলাকায় বেসরকারিভাবে কোনো আবাসিক প্রকল্প নিতে হলে রাজউক থেকে নকশাসহ অনুমোদন নেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। বেসরকারি আবাসিক প্রকল্পের ভূমি উন্নয়ন বিধিমালা অনুযায়ী এই অনুমোদন নিতে হয়।

সম্প্রতি সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে আবাসিক প্রকল্পের শত শত সাইনবোর্ড, বিলবোর্ড টাঙানো হয়েছে। এগুলোতে শোভা পাচ্ছে প্লট বিক্রির বিজ্ঞাপন। কিছু আবাসিক প্রকল্পের বিজ্ঞাপন অনলাইনেও দেওয়া হচ্ছে। রাজউক বলছে, এসব কার্যক্রম অবৈধ। এতে প্লট কিনে প্রতারিত হওয়ার আশঙ্কা আছে।

শুধু চিঠি না দিয়ে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে, রাজউককে শক্ত অবস্থানে যেতে হবে। এ ছাড়া কোনো প্রকল্পে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে গ্রাহককেও সচেতন হতে হবে।
মোহাম্মদ ফজলে রেজা, সভাপতি, বিআইপি

সংস্থাটির একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, আবাসিক প্রকল্পে প্লট কেনার পর সেখানে বৈধভাবে বাড়ি করতে রাজউক থেকে ভূমি ব্যবহারের ছাড়পত্র ও নির্মাণ অনুমোদন নিতে হবে। তবে আবাসিক প্রকল্পের অনুমোদন না থাকায় প্রকল্প এলাকায় ভবন নির্মাণের অনুমোদন পাওয়া যাবে না। এতে একজন গ্রাহক লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেও বৈধ উপায়ে বাড়ি করতে পারবেন না।


অন্যান্য প্রকল্পের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা
রাজউক সূত্রে জানা গেছে, কেরানীগঞ্জ এলাকায় মোট কতটি অবৈধ আবাসিক প্রকল্প আছে, তার পূর্ণাঙ্গ তথ্য তাদের কাছে নেই। তবে তাদের ধারণা, কেরানীগঞ্জের ১২টি ইউনিয়নে ছোট-বড় মিলিয়ে ৭০-৮০টি আবাসিক প্রকল্প রয়েছে। এর মধ্যে আপাতত তুলনামূলকভাবে বড় ১৫টিকে বালু দিয়ে প্রকল্প এলাকা ভরাট ও প্লট বিক্রির বিজ্ঞাপন বন্ধ করতে বলা হয়েছে। প্রকল্পগুলো হলো পশ্চিম ঘটারচর এলাকার মিলিনিয়াম সিটি; তারানগর এলাকার মধু সিটি, স্বপ্ন নিবাস ও সাফা গ্রিন সিটি; দেউলী মৌজার ম্যাক্স ওয়েল ওয়েস্টার্ন সিটি; আটি বাজার এলাকার মুক্তধারা, আটি মডেল টাউন, সোপান দক্ষিণা সিটি, ঢাকা মডার্ন সিটি লিমিটেড; রোহিতপুরের সবুজ ছায়া গ্রুপ, কালাকান্দির সানওয়ে রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড ডেভেলপার্স লিমিটেড; মাওয়া রোডের পাশে অ্যাপোলো হাউজিং লিমিটেড; কোন্দা ইউনিয়নের বসতভিটা ডেভেলপমেন্ট; ঢাকা-মুন্সিগঞ্জ রোডের পাশে নিউ ভিশন এবং তেঘরিয়া ইউনিয়নের সাউথ টাউন আবাসিক প্রকল্প।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজউক চিঠি দেওয়ার পরও আবাসিক প্রকল্পে প্লট বিক্রিসহ অন্যান্য কার্যক্রম চলছে। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে মধু সিটির বিপণন বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, তাঁদের প্লট বিক্রি অব্যাহত আছে। রাজউকের চিঠি পেয়েছেন কি না, জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বলেন, এ ব্যাপারে তিনি কিছু বলতে পারবেন না। দায়িত্বপ্রাপ্ত অন্য এক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেন তিনি।

রাজউকের নগর–পরিকল্পনাবিদ আশরাফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, প্রকল্পে মাটি ভরাট ও প্লট বিক্রি বন্ধে প্রকল্পের মালিক ও স্থানীয় প্রশাসনকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই এসব এলাকায় উচ্ছেদ অভিযানে যাবে রাজউক। পর্যায়ক্রমে কেরানীগঞ্জের অন্যান্য অনুমোদনহীন প্রকল্পের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

‘রাজউককে শক্ত অবস্থানে যেতে হবে’
কেরানীগঞ্জের দুই পাশে দুই নদীর পাশাপাশি রয়েছে জলাভূমি। অনেক এলাকাই নিচু। এ ছাড়া মোট ভূমির বড় একটি অংশ কৃষিজমি। এসবকে ঢাকা মহানগরের বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনায় (ড্যাপ) জলাভূমি ও কৃষিজমি হিসেবেই চিহ্নিত আছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাজউকের এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, বেশির ভাগ আবাসিক প্রকল্পই বন্যাপ্রবাহ এলাকা ও জলাভূমি ভরাট করে করা হয়েছে। ফলে অনুমোদন পাবে না জেনে তারা কেউ রাজউকে আসেনি।

আবার ছোট ছোট অনেক প্রতিষ্ঠান আছে, যেগুলোতে কয়েকজন মিলে সমিতির আকারে আবাসিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে, কিন্তু প্রতিষ্ঠানের নামে জমির মালিকানা নেই। ফলে এমন প্রতিষ্ঠানও অনুমোদনের জন্য আবেদন করেনি।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সভাপতি মোহাম্মদ ফজলে রেজা বলেন, ‘অনুমোদনহীনভাবে গড়ে ওঠা আবাসিক প্রকল্পগুলো পরিকল্পিত নগরায়ণের ক্ষেত্রে বড় বাধা। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো অবৈধ প্রকল্পও বন্ধ করতে পারেনি।

তাই শুধু চিঠি না দিয়ে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে, রাজউককে শক্ত অবস্থানে যেতে হবে। এ ছাড়া কোনো প্রকল্পে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে গ্রাহককেও সচেতন হতে হবে।’

সূত্র : দৈনিক প্রথম আলো

সংবাদটি শেয়ার করুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা

© All rights reserved © 2022 daily Ajker Songram
Customized By Shakil IT Park