স্টাফ রিপোর্টার :
রংপুরের বদরগঞ্জের মধুপুরে যমুনেশ্বরী নদী থেকে মাটি-বালু কেটে ভরা হচ্ছে ট্রাক্টরে। রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার মধুপুর ইউনিয়নের নাওপাড়ায় যমুনেশ্বরী নদীতে জেগে ওঠা চর থেকে অবৈধভাবে বালু ও মাটি তোলা বন্ধ হয়নি। বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর কিছুদিন বন্ধ থাকলেও আবারও বালু-মাটি তুলে বিক্রি করা হচ্ছে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে গ্রামের রাস্তা।
এদিকে যমুনেশ্বরী নদী থেকে মাটি-বালু তোলা নিয়ে গত ২৭ অক্টোবর আজকের পত্রিকায়, ‘চরের বালু তুলে বিক্রি, ঝুঁকিতে গ্রাম, সড়ক’ শিরোনামে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য শাহিনুর আলম বলেন, চার-পাঁচজন বালু ও মাটি বিক্রির নেতৃত্ব দিতেন। বিভিন্ন পত্রিকায় নিউজ প্রকাশের পর প্রায় ২০ দিন নদীর বালু ও মাটি বিক্রি বন্ধ ছিল, কিন্তু এক সপ্তাহ আগে আবার এক ব্যক্তি মাটি ও বালু তুলে বিক্রি শুরু করেছেন।
সম্প্রতি নাওপাড়ায় গিয়ে দেখা গেছে, নদীর মাটি ও বালু ট্রাক্টরে করে নেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন ইট ভাটায়। এই মাটি ও বালু বিক্রির নেতৃত্ব দিচ্ছেন মোয়াজ্জেম নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি। তিনি সাংবাদিকদের দেখে সটকে পড়েন। পরে মোবাইল ফোনে মোয়াজ্জেম বলেন, ‘আমি নিজের কাজে মাটি ও বালু নিয়ে যাচ্ছিলাম। পত্রিকায় নাম আসার কারণে সেটিও দুয়েকদিন আগে বন্ধ করে দিয়েছি। এখন বিবিএল ইট ভাটার মালিক মোকছেদুল ইসলামসহ পাঁচ-ছয়জন মাটি ও বালু বিক্রি করছেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই বালু বিক্রি করার অভিযোগে কয়েক মাস আগে ১৮ জনের নামে দুটি মামলা হয়েছে। সেখানে আমিও আসামি, জামিনে আছি।
স্থানীয়রা জানান, মধুপুর ইউনিয়ন পরিষদ ও ভূমি অফিসের প্রায় ৫০০ গজ দূরে রামরামপুর নাওপাড়া গ্রাম ঘেঁষে যমুনেশ্বরী নদী। এই নদীতে জেগে ওঠা চর থেকে শতাধিক ট্রাক্টরে বালু ও মাটি তোলায় হুমকির মুখে পড়ছে নাওপাড়া গ্রামসহ মধুপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন কাঁচা রাস্তা ও সড়ক।
এলাকার আরিফুল হক বলেন, ছোট রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন শতাধিক ট্রাক্টর চলাচল করায় যেকোনো মুহূর্তে ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক গৃহবধূ বলেন, এ এলাকায় ২৫-৩০টি ইট ভাটা রয়েছে। বেশির ভাগ ইটভাটার মালিক এখানকার মাটি ও বালু কিনে নিচ্ছেন। প্রতিদিন শতাধিক ট্রাক্টর চলাচলের কারণে শব্দে কানে কিছু শোনা যায় না।
বিবিএল ইট ভাটার মালিক মোকছেদুল ইসলাম বলেন, আমার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মিথ্যা। আমি মোয়াজ্জেমের মতো সেখানে বালু ও মাটি বিক্রির নেতৃত্ব দিচ্ছি না। নিজের ইট ভাটা রয়েছে। তাই সেখানে নিজের জমির উঁচুনিচু সমান করার জন্য মাটি কেটে ইট ভাটায় আনছি।
মধুপুর ইউপির চেয়ারম্যান নুর আলম ভুট্টু বলেন, নদী থেকে বালু ও মাটি বিক্রি করায় কয়েকজন লাভবান হলেও নানাভাবে ক্ষতির মুখে পড়ছে গ্রামের রাস্তাঘাট ও স্থানীয় লোকজন। এ নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে একাধিকবার কথা বলেছি, কাজ হয়নি।