নিজস্ব প্রতিবেদক:
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে সংঘবদ্ধ ধর্ষণে সোনিয়া আক্তার (১৫) নামে এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে।
এ ঘটনায় রবিবার দুপুরে মেয়েটির বাবা ফিরোজ আলম বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে স্বামীসহ ৯ জনকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করেন।
সংঘবদ্ধ ধর্ষনে জড়িত থাকায় স্বামীসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলো,স্বামী মাহিম ইসলাম (১৯), জয়নাল মিয়া (৪৫),বন্ধু সাকিব হোসেন (১৮), পল্লব হাসান (১৯)।
আটককৃতদের রবিবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়।
স্থানীয় লোকজন ও মামলা সূত্রে জানা যায়, ৭দিন বয়সে সোনিয়াকে দত্তক নেন পোগলদিঘা ইউনিয়নের গেন্দারপাড়া গ্রামের ফিরোজ আলম। তার বাড়ীতেই বড় হন সোনিয়া। গত বছর আওনা ইউনিয়নের কূলপাল গ্রামের লিপন মিয়ার ছেলে মাহিমের সাথে সোনিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের ৪ লাখ টাকা ও নানা বিষয়ে সোনিয়াকে নির্যাতন করে আসছিল মাহিম ও তার পরিবারের লোকজন। প্রায় ১০ মাস সংসার করার পর নির্যাতন সইতে না পেরে দেড়মাস আগে মাহিমকে তালাক দেন সোনিয়া।
তালাকের কিছুদিন পর থেকে সোনিয়ার সাথে পূণরায় মোবাইল ফোনে নিয়মিত যোগাযোগ শুরু করে মাহিম। একপর্যায়ে গত ২৩ অক্টোবর সোনিয়াকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে যায় মাহিম। পোগলদিঘা ইউনিয়নের ডুরিয়ারভিটা গ্রামে ছানোয়ার হোসেনের বাড়ীতে আটকে রেখে ধর্ষন করে তারা। দুইদিন পর সেখান থেকে একই উপজেলার আওনা
ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামে বন্ধু পল্লবের বাড়ীতে নিয়ে পূণরায় সংঘবদ্ধ ভাবে একাধিকবার ধর্ষন কওে সোনিয়াকে। এক পর্যায়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে সোনিয়া গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। অবস্থা বেগতিক দেখে মাহিম ও তার সহযোগীরা রাতেই সোনিয়াকে প্রথমে সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এতে অবস্থার আরো অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন। জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পথে গত ২৭ অক্টোবর বৃহস্পতিবার রাতে সোনিয়ার মৃত্যু হয়। পরে ময়নাতদন্ত শেষে ২৯
অক্টোবর (শনিবার) বিকেলে সোনিয়ার লাশ গেন্দারপাড়া গ্রামে এনে দাফন করা হয়।
সোনিয়ার মা বানেছা বেগম জানান, যৌতুকের ৪ লাখ টাকা না দেওয়ায় সোনিয়াকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নানা নির্যাতন করে আসছিল স্বামী মাহিম। এ কারনে দেড় মাস আগে সোনিয়া তার স্বামীকে তালাক দেয়। এরপর থেকে মাহিম মোবাইল ফোনে সোনিয়ার সাথে যোগাযোগ শুরু করে। হঠাৎ গত মঙ্গলবার সোনিয়াকে মোবাইল ফোনে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে মাহিম তার সহযোগীরা ধর্ষণ করে। পরে শুক্রবার
সকালে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোনিয়ার মৃত্যু হয়।
এ বিষয়ে সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহব্বত কবীর জানান, এ বিষয়ে থানায় মামলা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত ৪ আসামীকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামীদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।