বিশেষ প্রতিনিধি : যানজট কমিয়ে ঢাকাকে সচল রাখতে এবং নগরবাসীর কষ্ট কমাতে প্রয়োজনে সেতু ভবন ও বিআরটিএ ভবন ভেঙে ফেলা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, যে সেতু ভবন এখন আপনারা দেখছেন; সেখানে ছিল একটি সিটি ফরেস্ট। কেন এবং কাদের পরামর্শে এই ফরেস্ট নষ্ট করে সেখানে সেতু ভবন করা হলো জানি না। সেতু ভবনের পাশে আগে যাও কিছু গাছপালা ছিল, পরে সেগুলো কেটে সেখানে বানানো হলো বিআরটিএ ভবন। সেদিন দেখলাম, বাকি গাছগুলো কাটা হচ্ছে। তাদের কাছে জানলাম, গাছ কেটে সেখানে নতুন আবাসন প্রকল্প করা হবে। পরে আমি সেটা বন্ধ করেছি।
বুধবার রাজধানীর একটি অভিযাত হোটেলে বিশ্ব নগর দিবসকে সামনে রেখে আয়োজিত ‘নগর কথা, নিম্ন আয়ের মানুষের আবাসন ও নাগরিক সুবিধাসমূহ: প্রেক্ষিত ঢাকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ডিএনসিসির মেয়র এসব কথা বলেন।
মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, রাউজক নতুন ড্যাপ করেছে। আমরা দেখতে চাই, ড্যাপে সেতু ভবনের জায়গাকে কী হিসেবে দেখানো হয়েছে। সেটাকে যদি সিটি ফরেস্ট হিসেবে দেখানো হয়, তাহলে সেতু ভবন ও বিআরটিএ ভবন ভেঙে ফেলা হবে।
এসময় মেয়র অভিযোগ করে বলেন, আমরাই নিজেরাই নিজেদের প্রিয়, বসবাসের এই শহরকে শেষ করে দিচ্ছি। ড্যাপ কিছু দিন আগে প্রণয়ন করা হয়েছে। যার ফলাফল আমরা এখনই পাচ্ছি। প্যারিস পার্ক ঢাকা সিটির জন্য একটি ওপেন স্পেস। খোলামেলা জায়গা, শিশুদের খেলার জায়গা। অথচ ড্যাপে এই প্যারিস পার্কে ৩২টি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ৫২ কাঠা এই পার্কে কীভাবে ৩২টি প্লটে বরাদ্দ দেওয়া হলো? আমরা এসব কী করছি, কার জন্য; কার পরামর্শে করছি? আমরা আশা করি, নগরে কিছু করতে গেলে অবশ্যই যেন সিটি করপোরেশনের পরামর্শে করা হয়।
মেয়র আতিক বলেন, নদীর সীমানা নির্ধারণে যেভাবে আদালত থেকে আদেশ এসেছে, ঠিক সেভাবে ঢাকার খালগুলোর সীমানা নির্ধারণেও আদেশ প্রয়োজন। নদীর সীমানা নির্ধারণের আইন এবং খালের সীমানা নির্ধারণের আইনে রয়েছে ভিন্নতা। এক্ষেত্রে আইনের সংশোধন করা প্রয়োজন। নদীর মতো খালের সীমানা নির্ধারণে সিএস দাগ অনুযায়ী করতে হবে। এক্ষেত্রে মহানগর জরিপ অনুযায়ী নির্ধারণ করতে গেলে দেখা যাবে, সিএস জরিপে যে খাল ১০০ ফিট ছিল; সেটা মহানগরে আছে ১০ ফিট। তাই মহানগর জরিপ নয়, সিএস অনুযায়ী খালের সীমানা নির্ধারণ করতে আইনের সংশোধন করাটা খুব জরুরি।
তিনি বলেন, গত দুই বছর ধরে ঢাকার খালগুলো সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তর করেছে ওয়াসা। কিন্তু খালগুলো পরিদর্শনে গিয়ে দেখি সবই দখলে। আমার প্রশ্ন তাহলে এতদিন যাদের কাছে খালগুলো ছিল, তারা কী করেছেন? কেন তারা এসব খাল দখলের ব্যাপারে কাজ করলেন না? আপনারা খেয়াল করেছেন, ঢাকা সিটির তাপমাত্রা ভয়াবহভাবে বেড়ে গেছে। এজন্য উত্তর সিটি করপোরেশন গাছ লাগানো ও ছাদ বাগানকে উৎসাহিত করতে হাউজ ট্যাক্সের ওপর ১০ শতাংশ ছাড় দেওয়ার প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। এখন মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিলে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হবে। একই সঙ্গে যারা ভবনে রেইন ওয়াটার হারভেস্টিং করবে তাদেরও একই সুযোগ দেওয়া হবে।