শুভ্র শাওন :
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এখনো ১৪ মাস বাকি। এই নির্বাচন ঘিরে সরগরম হতে শুরু করেছে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন। সারা দেশে সমাবেশ করে চলেছে মাঠের বিরোধী দল বিএনপি। এ মুহূর্তে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে না গেলেও সাংগঠনিক শক্তির জানান দিতে চায় আওয়ামী লীগ। আগামী ২৯ অক্টোবর শনিবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগর আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার মাঠে লক্ষাধিক নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের ঢল নামিয়ে সাংগঠনিক শক্তির জানান দিতে চায় ক্ষমতাসীন দলটি। ঢাকা জেলা সম্মেলনের মাধ্যমে সাংগঠনিক শক্তি জানান দিতে মাঠে নামছে আওয়ামী লীগ।
পর্যায়ক্রমে ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতে বড় সমাবেশ করবে ক্ষমতাসীনরা। এ ছাড়াও নভেম্বরের শেষের দিক থেকে দলের সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলনের মাধ্যমে ডিসেম্বর পর্যন্ত মাঠ দখলে রাখবে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী ফোরামের একাধিক নেতা জানিয়েছেন, বিএনপি রাজধানীসহ সারা দেশে সমাবেশ করছে। আমাদেরও সাংগঠনিক শক্তির জানান দিতে হবে।
আগামী শনিবার ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের মধ্য দিয়ে বিরোধী শক্তিকে নিজেদের অবস্থান জানান দিতে ঐকমত্য রয়েছে ক্ষমতাসীনরা। বড় ধরনের ব্যাপক জনসমাগমের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। সম্মেলন সফল করতে একাধিকবার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা বর্ধিত সভা, কর্মিসভা করেছেন। এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিভাগের আওয়ামী লীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, ‘আগামী শনিবার ঢাকা জেলা সম্মেলনের মাধ্যমে সাংগঠনিক শক্তি জানান দেওয়া হবে। এ জন্য ধামরাই, সাভার, আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দকে নিয়ে বর্ধিত সভা করে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘দুই বছর আগেও ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ সবচেয়ে দুর্বল সংগঠন ছিল। সঠিক পরিচর্যা করলে একটি বাগান সুন্দর হতে পারে আবার সঠিক পরিচর্যা না করলে সুন্দর বাগানও আগাছায় পরিণত হয়, ঢাকা জেলা তার প্রমাণ।
এ জেলা আওয়ামী লীগ আগের চেয়ে শক্তিশালী ও ঐক্যবদ্ধ। আগামী শনিবার সম্মেলনে লাখো জনতার উপস্থিতির মাধ্যমে তার প্রমাণ হবে।’ জানা গেছে, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে কালারফুল করতে সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ঢাকা জেলার অধীনে প্রতিটি থানাকে আলাদা টি-শার্ট ও ক্যাপ পরে জনসভায় হাজির হতে বলা হয়েছে। সে অনুযায়ী থানা নেতারা এখন প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আগামী শনিবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগর আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার মাঠে লক্ষাধিক নেতা-কর্মী ও সমর্থক জমায়েতের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের বিশাল আয়োজন করা হয়েছে। বিরাট মঞ্চ ও প্যান্ডেল তৈরি করা হয়েছে। ব্যানার, ফেস্টুন ও পোস্টারে ছেয়ে গেছে সম্মেলনস্থল। তৈরি হয়েছে শুভেচ্ছা তোরণ।
দীর্ঘদিন পর ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের জন্য প্রস্তুত ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ। নাম ‘ত্রিবার্ষিক’ সম্মেলন হলেও এবারের সম্মেলনটি হচ্ছে আট বছর পর। এতে নেতা-কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে। সম্মেলন উদ্বোধন করবেন প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম এমপি। প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। প্রধান বক্তা কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি। ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা জানান, সম্মেলন সফল করার লক্ষ্যে জেলার পাঁচটি উপজেলার মধ্যে ধামরাই উপজেলা, সাভার উপজেলা, আশুলিয়া থানা, কেরানীগঞ্জ উপজেলা, কেরানীগঞ্জ মডেল থানা, দোহার উপজেলা ও নবাবগঞ্জ উপজেলাসহ সাতটি ইউনিটের নেতা-কর্মীরা কাজ করে যাচ্ছেন। পাশাপাশি আগামী সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলন মোকাবিলায় কাকে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে এ নিয়েও ব্যাপক আলোচনা চলছে।