মোঃ মাসুদ রানা, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি-
স্থানীয় প্রভাব বিস্তার, আর অবৈধ টাকার জোরে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন ঝিনাইদহ সদর
উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা অসিম কুমার গাঙ্গুলী। উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের অকথ্য
ভাষায় গালিগালাজ, অসদাচারণ, দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
অসীম কুমার গাঙ্গুলীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণ হলেও অদৃশ্য কোন কারণে তার
বিরুদ্ধে এখনও কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এর ফলে তিনি আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন।
জানা যায়, ২০২০ সালের ১৫ আগস্ট শৈলকুপা উপজেলা সহকারী উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা
কর্মকর্তা অসিম কুমার গাঙ্গুলীর বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির খবর প্রকাশিত হয়
বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে। বিষয়টি আমলে নিয়ে স্বাক্ষ্য শিক্ষা পরিবার কল্যাণ বিভাগের
নির্দেশে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর তদন্তের নির্দেশ দেয়। সেসময় খুলনা বিভাগীয় পরিচালক
মাগুরার উপ-পরিচালককে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু সেসময় অনিয়মের আসল
ঘটনা ধামাচাপা দিয়ে মনগড়া প্রতিবেদন দাখিল করে ওই কর্মকর্তারা। এ নিয়ে ক্ষোভের সৃষ্টি
হয়। পরবর্তীতে আবারো পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়। সেখানে
পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর চুয়াডাঙ্গার উপ-পরিচালক তদন্ত করে অনিয়মের সত্যতা পায়। অনিয়ম
পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সুপারিশ করে ওই কর্মকর্তা। কিন্তু অদৃশ্য কারণে তার
কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত হওয়ার পরও তার পদোন্নতী হয়। শৈলকুপা
থেকে পদোন্নতী পেয়ে কুড়িগ্রাম ও পরে ঝিনাইদহ সদর উপজেলায় বদলি হয়ে আসেন তিনি।
এরপর থেকে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন তিনি। স্থানীয় প্রভাব খাটিয়ে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের
কর্মকর্তাদের অপমান অপদস্ত শুরু করে।
সম্প্রতি কর্মকর্তাদের অপমান ও তাদের সাথে অসাদাচারণ ও মারমুখি আচরণের অভিযোগে
পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে একটি অভিযোগ দিয়েছে পরিবার পরিকল্পনা
বিভাগের জেলা পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা।
অভিযোগে বলা হয়, গত ২০ অক্টোবর ঝিনাইদহ পরিবার পরিকল্পনা সহকারী পরিচালক মোজাম্মেল
হকের অফিসে কক্ষে আসেন সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা অসিম কুমার গাঙ্গুলী। এ
সময় সহকারী পরিচালক মাঠ পর্যায়ে কাজের অবস্থা জানতে চাইলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ডিস্ট্রিক্ট
কনসালটেন্ট ডাক্তার শহিদুর রহমানের সামনেই সহকারী পরিচালক মোজাম্মেল হককে
মেরুদন্ডহীন অফিসারসহ নানা অপমানজনক কথা বলে অসাদাচরন করেন ।
এমনকি ডিস্ট্রিক্ট কনসালটেন্ট গাঙ্গুলীকে থামানোর চেষ্টা করলে তার উপরে ক্ষিপ্ত হয়ে বলে,
আপনাকেও দেখে নেওয়া হবে। গাঙ্গুলী বলেন, আমি স্থানীয়। এই শহরে আমার অনেক লোক আছে
ফোন দিলে এখনই শত শত লোক আসবে। তাদের দিয়ে আপনাদের শায়েস্তা করতে পারি।
অনিয়ম দুর্নীতি করেও পদোন্নতী পেয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন অসিম কুমার গাঙ্গুলী। তার
বিরুদ্ধে কর্মকর্তাদের সাথে অসাচারণসহ দুর্নীতির ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী পরিবার পরিকল্পনা
বিভাগের কর্মকর্তাদের।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত অসিম কুমার গাঙ্গুলী বলেন, আমি তাদের সাথে কোন অসাদাচারণ করিনি।
ওই সময় আমার একটি ফোন কল আসে। আমি কল রিসিভ করায় আমার উপর উনারা রাগ করেছেন।
তাদের সাথে খারাপ আচরণের কোন ঘটনা ঘটেনি