শুভ্র শাওন : ঘুর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে বৃষ্টি এবং প্রচণ্ড ঝোড়ো হাওয়ায় ভাসানচর-কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরের বেশ কিছু ঘরবাড়ির চাল উড়ে গেছে। এ ছাড়া কয়েকটি বাড়ি ধসে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। পাহাড়ের পাশের ক্যাম্পের বাসিন্দাদের মাঝে ভূমিধ্বসের আতঙ্ক বিরাজ করছে। তাদের সতর্ক থাকতে মাইকিং করা হচ্ছে।
দুর্যোগ মোকাবিলায় ক্যাম্পে সাড়ে তিন হাজার ভলান্টিয়ার প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানান কক্সবাজারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ের (আরআরআরসি) কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আমরা ভয়ে আছি, ভারী বৃষ্টিপাত হলে ক্যাম্পে ভূমিধসের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। ক্যাম্পে অতি ঝুঁকিপূর্ণদের চিহ্নিত করে কাল থেকে সরিয়ে নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে নোয়াখালীর ভাসানচর ও কক্সবাজারের শিবিরে কিছু ঘরবাড়ির টিন-চাল উড়ে গেছে। সেগুলোর বিষয়ে আমরা কাজ করছি।’ তিনি আরো বলেন, ‘সব রোহিঙ্গা শিবিরে কমিটি করা হয়েছে। মাইকিং করে লোকজনকে সতর্ক থাকার পাশাপাশি ক্যাম্পের দুর্বল ঘরগুলো বাঁশ ও রশি দিয়ে মজবুত করতে বলা হয়েছে।’
এ বিষয়ে টেকনাফ লেদা রোহিঙ্গা শিবিরের ডেভেলমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলম বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ের বিষয়ে সকালে ক্যাম্পে মাইকিং করে সবাইকে সর্তক করা হচ্ছে। এ ছাড়া পাহাড়ে ঝুকিঁপূর্ণ বাসিন্দাদের নিরাপদে সরে যাওয়ার জন্য বলা হচ্ছে। বিশেষ করে অন্তঃসত্ত্বা নারী ও শিশুদের পাশের স্কুল এবং খাদ্য বিতরণ সেন্টারে আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে।’
উখিয়া কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা মো. ইউনুস জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঘাত আনতে পারে, এমন আশঙ্কার খবর ক্যাম্পে প্রচার করা হচ্ছে। তাদের ক্যাম্পটি পাহাড়ের পাশে এবং ঘরগুলো ঝুপড়ি হওয়ায় তারা আতঙ্কিত। নিরাপদ স্থানে আশ্রয় না নিলে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানলে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
এ দুর্যোগ মোকাবিলায় সোমবার (২৪ অক্টোবর) বিকালে কক্সবাজারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ে (আরআরআরসি) সার্বিক বিষয়ে একটি প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় সেনাবাহিনী, জেলা প্রশাসন, এপিবিএন ও আইএনজিওর প্রতিনিধি এবং সংশ্লিষ্ট অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আরআরআরসি কার্যালয় জানায়, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় ক্যাম্পে স্কুল ও মসজিদ-মাদ্রাসাসহ মজবুত শেল্টারগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বিশেষ করে, ক্যাম্পে সেনাবাহিনী, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, রেডক্রস, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, দমকল বাহিনী, বিভিন্ন দাতা সংস্থার কর্মীসহ রোহিঙ্গা স্বেচ্ছাসেবীও দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে। এ ছাড়া ক্যাম্পে মাইকিং করে সবাইকে সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে। পাশাপাশি প্রতিটি ক্যাম্পে সিআইসির নেতৃত্বে একটি করে দুর্যোগ মোকাবিলায় কমিটি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ৮-আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সহকারী পুলিশ সুপার মো. ফারুক আহমেদ বলেন, ‘ক্যাম্পে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত রয়েছি। সকাল থেকে সব ক্যাম্পে মাইকিং করে রোহিঙ্গাদের সর্তক থাকতে বলা হচ্ছে। ভারী বৃষ্টিপাত হলে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের ক্যাম্পের ভেতরে মজবুত লার্নিং সেন্টারগুলোতে আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে।’
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ এরফানুলক হক চৌধুরী বলেন, ‘স্থানীয়দের পাশাপাশি রোহিঙ্গা শরণার্থীদেরও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। দুর্যোগে অবহেলা না করে নিরাপদ স্থানে থাকার জন্য মাইকিংসহ নানাভাবে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
প্রকাশক : শহিদুল ইসলাম
সম্পাদক : এম,এস,এ রেজা
প্রকাশক : 01746808322
সম্পাদক : 01712340047
ইমেইল : dailyajkersongram@gmail.com
Copyright © 2024 দৈনিক আজকের সংগ্রাম. All rights reserved.