আর,এম রাকিব , খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:
নবান্নের আনন্দে কৃষকের মুখে হাসি। আমন ধান কাটার ধুম লেগেছে খানসামা উপজেলায়। উপজেলা জুড়ে আগাম জাতের ধান কাটাই মাড়াই চলছে পুরোদমে। মাঠের সোনালী ধান এখন ঘরে তুলতে শুরু করেছে এ অঞ্চলের কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ জানায়, চলতি বছর আমন চাষে প্রতিকুল আবহাওয়া মোকাবিলা করতে হয়েছে ছয় উপজেলার কৃষকদের। কিন্ত বর্তমানে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় নির্বিঘ্নে ধান কাটা মাড়াই ও শুকানোর কাজ করতে পারছেন কৃষান-কৃষানিরা। মাঠ জুড়ে সোনালী ধানের মৌ মৌ গন্ধে মনের আনন্দে কাজ করছে কৃষকেরা। কথা বলার মতো ফুরসত নেই তাদের।
ধান কেটে অনেক কৃষকই আঁটি বেঁধে কাঁধে করে, আবার বিভিন্ন যানবহনে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে অনেকেই। বাসা-বাড়ির উঠানে চলছে আগাম জাতের ধান মাড়াইয়ের কাজ। এসব ধান নিয়ে কৃষকের যেমন ব্যস্ততা তেমনি আনন্দও প্রচুর। অনেকের বাড়িতে চলছে শীতের সকালে ভাঁপা পুলি, তেল পিঠা, নতুন চালের পায়েস ও নাড়ু মুড়ির মুখরোচক খাবার।
এবার উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের আমন রোপন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৫ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ কম হয়েছে।
খানসামা উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে ১৩ হাজার ৭৬৫ হেক্টর জমিতে রোপা আমন আবাদ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে চাষাবাদ হয়েছে ১৩ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে। অপরদিকে, অনাবৃষ্টির কারণে ১৫ হেক্টর জমিতে চাষীরা চাষাবাদ করতে পারেনি।
আলোকঝাড়ী ইউনিয়নের মেম্বারপাড়ার কৃষক শহিদ মিয়া জানান, প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যেও ধানের বাম্পার ফলন করেছে কৃষকরা। অগ্রহায়ণ মাসে পুরো ধান কাটা শুরু হলেও আগাম জাতের বিভিন্ন ধান কার্তিকের মাঝামাঝি থেকে কাটা শুরু করেছে।
একই এলাকার কৃষক মালেক জানান, অনাবৃষ্টি ও বিভিন্ন কারণে আমন ধান চাষে ব্যাঘাত ঘটলেও এবার ধানের ভাল ফলন হয়েছে। আগাম জাতের ধানের ভাল ফলনে আমি খুশি। ধান তুলে ওই জমিতে সার ছাড়া শীতের সবজি ছাড়াও আলু, রসুনের প্রচুর আবাদ হয়। এ কারণেই দুই দিক থেকে কৃষকের লাভ। যদিও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে অধিকাংশ প্রান্তিক কৃষক দিশাহারা। তবু্ও আশার আলো দেখছে আমন চাষীরা।
ইতোমধ্যে কৃষক ধান কাটতে শুরু করেছেন। বাজারে ভালো দাম পেলে প্রান্তিক কৃষকরা এবার লাভবান হবে। পাশাপাশি কৃষকের ঘরে ঘরে শুরু হয়েছে নবান্ন উৎসব। এ যেন বাঙালি সংস্কৃতির চিত্র ফুটে উঠছে গ্রাম-গঞ্জে।