লালমনিরহাট প্রতিনিধি :
বিল পেয়ে মোটা অংকের ঘুষ না দেয়ার কারণে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন বিলে স্বাক্ষর না করা, শিক্ষার্থীদের কাছ রেজিস্ট্রেশনের অতিরিক্ত ফি আদায় করাসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার ‘নর্থ বেঙ্গল টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজ’ এর অধ্যক্ষ রজিনা খাতুনের বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা কলেজ সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে একাধিকবার অভিযোগ করেও কোন সুফল পায়নি বলে দাবি করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, জুন মাসে অধ্যক্ষসহ ৬ শিক্ষক কর্মচারী ৩০ লাখ টাকা এরিয়া বিল উত্তোলন করেন। জুলাই ও আগস্ট মাসের বেতন শিটে স্বাক্ষর নিতে অধ্যক্ষের নিকট প্রভাষক মাহবুব হোসেন বসুনিয়া, মহসিন বসুনিয়া, ফাতিমা বেগম, কম্পিউটার অপারেটর রবিউল ইসলাম ও পিয়ন আব্দুল্লাহ যান। এ সময় অধ্যক্ষ রজিনা খাতুন কলেজের সভাপতি ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদের উৎকোচ দিতে হবে দাবি করে তাদের কাছে মোটা অংকের টাকা দাবি করেন। উৎকোচের টাকা ছাড়া তিনি বেতনের শিটে স্বাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানান। টাকা না দেয়ায় ৩ মাস ধরে বেতন বন্ধ থাকায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন বলে জানান শিক্ষক ও কর্মচারীরা।
বেতনের জন্য অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ করায় ওই ৫ শিক্ষক কর্মচারীকে হয়রানি করার জন্য উল্টো তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেন অধ্যক্ষ রজিনা খাতুন। এমনকি তাদেরকে চাকরিচ্যুত করবেন বলে প্রকাশ্য হুমকিও দেন তিনি।
এছাড়াও ওই কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক (কারিগরি) শাখার ২০২২ সালের এইচএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ বাবদ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ভাউচারবিহীন অতিরিক্ত ফি নেয়ায় অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা কলেজের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে কয়েকদফা লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগ পেয়ে কলেজ সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনা তদন্তের জন্য ১৭ অক্টোবর তদন্তে দিন ধার্য করে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল হোসেনকে দায়িত্ব দেন।
এ বিষয়ে ওই কলেজের অধ্যক্ষ রজিনা খাতুন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কোন কলেজেই টাকা ছাড়া এমপিও হয়না। তারা আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করেছেন তা মিথ্যা। তাদের সাথে পারিবারিক বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছে। এ কারণে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
নর্থ বেঙ্গল টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুল হক সুমন বলেন, সবেমাত্র যোগদান করেছি। এ বিষয়ে দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি বক্তব্য ও অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।