ফরিদপুর থেকে ফিরে এম, এস, এ রেজা:
ফরিদপুর-২ (নগরকান্দা-সালথা-কৃষ্ণপুর) আসনের উপনির্বাচনের উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে গোটা এলাকাজুড়ে। আগামী ৫ নভেম্বর এ আসনের উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন সামনে রেখে একাধিক প্রার্থী প্রচার-প্রচারণা চালালেও আওয়ামী লীগের সমর্থন না পেয়ে অনেকে পিছুটান দিয়েছেন।
তবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় তথ্য ও গবেষণা উপকমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট জামাল হোসেন মিয়া। এরই মধ্যে জামাল হোসেন মিয়া এলাকায় শো-ডাউনের ঘোষণা দিয়েছেন। ফলে এ আসনের উপনির্বাচন জমজমাট লড়াইয়ের আভাস মিলেছে। ইতোমধ্যে নৌকার প্রার্থী হিসেবে শাহদাব আকবর লাবু চৌধুরী এলাকায় গণসংযোগ শুরু করে দিয়েছেন।
জামাল হোসেন মিয়া শনিবার (৮ অক্টোবর) শো-ডাউনের মাধ্যমে তার নির্বাচনী প্রচারনা শুরু করবেন বলে জানান।
আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ফরিদপুর-২ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নের জন্য মোট ১৭ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। তারা হলেন-সদ্য প্রয়াত সাজেদা চৌধুরীর দুই ছেলে আয়মন আকবর বাবলু চৌধুরী ও শাহদাব আকবর লাবু চৌধুরী, আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য বিপুল ঘোষ, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা বাহালুল মজনু চুন্নু, জাকের পাটির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান সায়েম আমীর ফয়সাল, নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্য জামাল হোসেন মিয়া, নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান সরদার, আওয়ামী লীগের শ্রম ও জনশক্তি বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য মেজর (অব.) আতমা হালিম, ফরিদপুর জেলা শ্রমিক লীগের সাবেক সহ-সভাপতি সাইফুজ্জামান চৌধুরী জুয়েল, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য মো. সাব্বির হোসেন, ফরিদপুর জেলা মৎস্যজীবী লীগের আহ্বায়ক কাজী আব্দুস সোবহান, সাবেক ছাত্রনেতা ও সাংবাদিক মো. লায়েকুজ্জামান, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু ইউসুফ মিয়া, কালাচাঁদ চক্রবর্তী, এয়ার কমোডর কাজী দেলোয়ার হোসেন, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান হাবিব এবং এ বি এম শফিউল আলম বুলু।
গত মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) গণভবনে আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সিদ্ধান্তে ফরিদপুর-২ আসনে নৌকা প্রতীক তুলে দেওয়া হয় প্রয়াত সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর কনিষ্ঠপুত্র শাহদাব আকবর লাবু চৌধুরীর হাতে। ফলে বাকি প্রার্থিরা হতাশ হন। শাহদাব আকবর লাবু চৌধুরী নৌকা প্রতীক পাওয়ায় তার কর্মী-সমর্থকদের মাঝে উল্লাস লক্ষ্য করা গেছে। তার অনুসারীরা মিষ্টি বিতরণ ও আনন্দ মিছিল করেছেন।
লাবু চৌধুরী বিরোধী গ্রুপটির মাঝে ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে। লাবু চৌধুরীর বিরুদ্ধে প্রার্থী দিতে একাট্টা হয়েছেন লাবু বিরোধীরা। তারা যে কোনো মূল্যে লাবু চৌধুরীকে হারাতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। তারা বলছেন, তারা নৌকার বিরুদ্ধে নয়, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নয়; তাদের যুদ্ধ ব্যক্তির বিরুদ্ধে। তাই তারা লাবু চৌধুরীর বিরুদ্ধে শক্তিশালী একজন প্রার্থী দেবেন স্বতন্ত্র হিসেবে। সেই মোতাবেক সকলের পছন্দের ব্যক্তি হচ্ছেন অ্যাডভোকেট জামাল হোসেন মিয়া।
জামাল হোসেন মিয়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হবার ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে বেশ আলোচনা শুরু হয়েছে ফরিদপুর-২ আসনের প্রত্যন্ত এলাকায়। নির্বাচনে লাবু চৌধুরীর সঙ্গে শক্ত লড়াই হবে জামাল হোসেন মিয়ার— এমন বলছেন স্থানীয়রা। আগামী ৫ নভেম্বর জমজমাট ভোট লড়াই দেখতে অপেক্ষায় আছেন ফরিদপুর-২ আসনের মানুষ।